আরিফ আজাদের নতুন বই ‘নবি জীবনের গল্প’। প্রিয় নবিকে ভিন্নভাবে দেখার দূরবীক্ষণ যন্ত্র। সীরাতের বাঁকে বাঁকে ছড়িয়ে থাকা নববি মণিমুক্তো। নবি জীবনের প্রতিটি পঙ্ক্তি বাঙ্ময় হয়ে আছে নানা ঘটনা-মাধুর্যে। বড় অমূল্য সেই মুহূর্তগুলো। আরিফ আজাদ এই বইতে সেই মুহূর্তগুলো এঁকেছেন কলমের কালিতে। গল্পে গল্পে তিনি দেখিয়েছেন প্রিয় নবি কেমন ছিলেন ঘরে-বাইরে, মসজিদে-মজলিসে, মদীনার অলিতে গলিতে, সাহাবিদের ঘরদোরে, শক্ত চাটাইয়ে, কেমন সময় কাটতো প্রিয়তমা স্ত্রীদের সাথে কিংবা নিশি জাগরণে রবের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে।
.
পাঠক এই বইতে আবিষ্কার করবেন এমন একজন ব্যক্তিকে, যিনি ছিলেন মানুষ, আবার একই সাথে আল্লাহর দূত। সৃষ্টির সেরা হয়েও যার জীবনটা কাটতো অতি সাধারণভাবে, তবে ছিল মনুষ্যের সেরা রূপ। নবিকুলের শিরোমণিকে আসুন আমরাও নতুন করে জানি।
-30%
Meet The Author
1 review for নবি-জীবনের গল্প
Add a review Cancel reply
Jobair Emad –
আহা!সারাক্ষণ কি একাডেমিক পড়াশোনা করা যায়?
বিরক্তিকর!পড়তে পড়তে একঘেয়েমি চলে আসে।তখন এসব নেতিবাচকতা মুছতে একটু বিনোদনের দরকার পড়ে।আর সেই বিনোদন যদি বইয়ের দ্বারা আহরণ করা যায় তবে তো কেল্লাফতে।বিনোদনের পাশাপাশি হরেক রকমের জ্ঞানও মেলে।কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো বিষয়।
এমনই এক পরিস্থিতির শিকার হয়ে জনপ্রিয় লেখক আরিফ আজাদের ‘নবি জীবনের গল্প’ বইটি হাতে নেওয়া।বহুদিন ধরে পড়ব পড়ব ভাবছিলাম শেষমেষ সে সময়টা দোরগোড়ায় এসে হাজিরা দেয়।
বইয়ের শুরুতেই লেখক আরিফ আজাদ বইটি লেখার উদ্দেশ্য সবাইকে জানিয়ে দেন।২০২০ সালের শেষের দিকে নবিজিকে ঘিরে ফ্রান্স সরকার যে ধৃষ্টতা ও অপকর্মের প্রদর্শন করে তারই প্রতিবাদস্বরূপ এ বই।আমাদের সমাজে এমন অনেকেই আছেন যারা ফ্রান্স সরকারের ন্যায় প্রতিনিয়ত নগ্ন আচরণে লিপ্ত।জেনে বা জানতে না চেয়ে তারা রোজই ইসলামের বিরুদ্ধে প্রশ্ন দাঁড় করাতে তৎপর।পাল্লাটা যখন নবিজির দিকে মোড় নেয় তখন মোটা দাগে প্রশ্নটা করা হয় উনার পবিত্র আত্মাকে কেন্দ্র করে,উনার চরিত্রকে নিয়ে।কুরআন ঠিকঠাক বুঝে না উঠতেই তারা গর্জে ওঠে-“আরে এ তো কুরআনের ভুল!এটা স্রষ্টার গ্রন্থ তো হতেই পারে না!” “এগারোটা বিয়ে করার মানে কি!” ইত্যাদি ইত্যাদি। নিজের স্বার্থে সত্য-মিথ্যার তফাৎ না করে কতশত প্রশ্ন নিয়ে তারা প্রস্তুত থাকে নবিজির নামে কুটুক্তি ছড়াতে,মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করতে। অনেক মুসলিমই তাদের ছোবলে পড়ে ঘাবড়ে যায়,বুঝে উঠতে পারে না কোনটা ঠিক।
কিন্তু আমরা কি জানি জুলাইবিব (রা.) এর কথা? যার কিনা কোন প্রকারের বংশ মর্যাদা ছিল না,কৃষ্ণ-গাত্রবর্ণ ও কৃশকার দেহের জন্য তিনি সারা আরবে ছিলেন অবহেলিত,তাকে কতই না উত্তম ভাবে মূল্যায়ন করেছেন আমাদের নবিজি। যখন সবাই উমরার জন্য মক্কায় আগমন করতে তৎপর, তখন তিনি নিজ ও পরিবারের স্বার্থের ওপর দ্বীনের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। প্রতিশোধ নেওয়ার মোক্ষম সুযোগকেও নাকচ করে শত্রুকে ভালোবাসা দিয়ে বন্ধু বানিয়ে নেওয়ার মহৎ গুণও উপস্থিত ছিলে উনার মাঝে। শত্রুর জন্য হিদায়েতের দোয়া করতেও ভুলতেন না। শুধুমাত্র বেদুইন ব্যবসায়ীর স্বার্থ রক্ষার্থে শত্রুর মুখোমুখি হতেও তিনি দ্বিধা করেননি।
এমনই হাজারো গুণে ভরপুর ছিল নবিজির চরিত্র,যা উনাকে মানব থেকে মহামানবে পরিণত করেছে।
‘নবি জীবনের গল্প’ বইয়ে লেখক আরিফ আজাদ নবি জীবনের এমনই ২১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে নিজ ভাষায় সংকলন করেছেন।যারা পূর্বে লেখকের বই পড়েছেন তারা ভালই জানেন শব্দ চয়নে লেখকের রয়েছে অনন্য এক বৈশিষ্ট্য,যা পাঠককে বইয়ের সাথে জব্দ করে রাখতে সক্ষম।আলোচ্য বইটিও এর ব্যতিক্রম নয়৷
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে-সিরাহ থাকতে ‘নবি জীবনের গল্প’ বইটি পড়ব কেন?
প্রথমত এ বইয়ে প্রতিটি গল্পের শেষপ্রান্তে এসে লেখক উক্ত ঘটনা থেকে কি কি শিক্ষণীয় বিষয় আছে বা ঘটনাটি আমাদের কি শেখায় তা ধরে ধরে দেখিয়ে দেন যা সাধারণ সিরাত গ্রন্থে অনুপস্থিত।
দ্বিতীয়ত বইটি একটি আয়নার ন্যায়,যেখানের কাচ তৈরি এক মহামানবের উত্তম চরিত্র ও চিন্তাচেতনার নির্যাস দ্বারা।অন্তত সে মূল্যবান দর্পণে নিজের অবয়ব কেমন দেখায় সে সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য হলেও একবার বইটি পড়া দরকার।
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।